
যশোর শহরের চাঁচরায় ছিলেন এক দাবাপ্রিয় রাজা
যশোর শহরের চাঁচরায় ছিলেন এক দাবাপ্রিয় রাজা
প্রায় দেড়শো বছর আগের কথা।যশোর শহরের চাঁচরায় এক রাজা ছিলেন।তিনি ছিলেন একজন পাকা দাবাড়ু। কেউ তাঁকে হারাতে পারতো না। একবার পশ্চিমা দেশ থেকে এক তুখোর দাবাড়ু এলেন তাঁর সাথে দাবা খেলতে। সবাইকে জানিয়ে দেয়া হলো, নির্দিস্ট দিনে পশ্চিমা দাবাড়ুর সাথে রাজা খেলবেন। সে অনুসারে রাজপ্রাসাদে দাবার সকল আয়োজন সম্পান্ন হলো।
যথা সময় রাজা ও পশ্চিমা দাবাড়ু এসে বসলেন দাবা বোর্ডের দুদিকে। চারদিকে রাজার পারিষদ অামলা, কর্মচারীরা গভীর উৎসুক্য নিয়ে খেলা দেখছেন। উভয়ে বেশ কিছু চালও দিয়েছেন।এক পর্যায় চাল দিতে গিয়ে রাজা খুব দ্বিধায় পড়ে গেলেন। নির্দিস্ট ঘুঁটিটি চালবেন কি চালবেন ন। এ নিয়ে বিস্তর ভাবছেন।
এমন সময় রাজপ্রাসাদের সিংহদ্বার থেকে প্রচণ্ড শব্দে সিঙ্গা বেঁজে উঠলো। এই সিঙ্গা ধ্বনি বিপদের।রাজা শব্দ শুনে বিস্মিত ও বিরক্ত হলেন। উপস্থিত পারিষদ ও অমাত্যরা আতংকিত হলেন এবং রাজা উঠে চলে গেলেন সিংহদ্বারে। তখনও উর্দিপরা দ্বাররক্ষী সিঙ্গা ফুঁকিয়েই চলেছেন।
রাজা তাঁর কাছে পৌছামাত্র দ্বাররক্ষী কাছে এসে অনুচ্চ কন্ঠে রাজাকে বললো, তিনি যে চালটা দিতে চাচ্ছেন তা দিলে তিনি অতি সহজে মত হয়ে যাবেন।রাজা দাঁড়িয়ে কিছু্ক্ষণ ভাবলেন। তারপর আবার রাজপ্রাসাদে দাবা কক্ষে ফিরে গেলেন্।
পশ্চিমা দাবাড়ু তাঁকে সিঙ্গা ফুঁকার কারণ জানতে চাইলে রাজা বললেন, দ্বারী ব্যাটা উম্মদ ! মাঝে মাঝে ও এ রকম করে। রাজা এবার অাগের ঘুঁটিটি না চেলে অন্য একটি ঘুঁটি চাললেন এবং মাত হওয়া থেকে রক্ষা পেলেন।
সূত্র : মোরসালিন অাহমেদ এর গল্পে গল্পে দাবা খেলা গ্রন্থ থেকে সংকলিত।